৩০ বছর ধরে ইট-বালু-পাথর খান তিনি!
৩০ বছর ধরে ইট-বালু-পাথর খান তিনি!তিন বেলা প্লেট ভরে ভাত-মাছের বদলে ইট, পাথর, মাটি খেয়ে বেঁচে আছেন তিনি। এমনকি চায়ের সঙ্গে বালু, পাউরুটি কিংবা স্যুপে নুড়ি পাথর মিশিয়ে খেয়ে প্রশান্তির ঢেকুর তোলেন। বিগত ৩০ বছর ধরে ভারতের উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা হানস রাজ এমনই অদ্ভুত কাজ করে আসছেন।
ইট-বালি খাওয়ার দৃশ্য দেখতে অনেকেই তার বাড়ির আঙিনায় ভিড় জমান। তিনি ‘স্যান্ড ম্যান বা বালু মানব’ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তার মতে, এসব খেয়েও দিব্যি ভালো আছেন। শারীরিক কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়নি এখনো।
৩০ বছর ধরে ইট-বালু-পাথর খান তিনি!For More News Update:
হানস রাজ বলেন, ‘এখন ইট, বালু ও পাথর খাওয়া আমার জন্য খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এগুলো খেলে আমি শরীরে শক্তি পাই। এমনকি আমার পেটে বা দাঁতেও কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। আমার দাঁতগুলোও এখনো সুস্থ আছে। অথচ প্রতিদিনই আমি শক্ত পাথরগুলো চিবিয়ে খেয়ে থাকি।’
২০ বছর বয়স থেকেই তিনি খাবার হিসেবে ইট, মাটি, বালু ও পাথর খাওয়া শুরু করেন। এখন তার বয়স ৫০ এর কোঠায়। চিকিৎসকদের মতে, তিনি পিকা রোগে ভুগছেন। মানসিক এ রোগে যারা ভোগেন; তারা বিভিন্ন অখাদ্যের উপর আকর্ষণ বোধ করেন।
এসব রোগী খাওয়ার অযোগ্য বস্তু যেমন- মাটি, ইট, পাথর, লোহা, সাবান, চুল, ধাতু, কাঁচ, কার্পেট, কাপড় ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। অনেক সময় হতাশা-উদ্বেগ, অপুষ্টি, রক্ত স্বল্পতা ইত্যাদির সমস্যা হলে পাইকা হতে পারে।
হানস রাজের মতো এমন রোগে বিশ্বের অনেক মানুষই ভুগছেন। কয়েক বছর আগে ভারতে নেহা সাউ নামের ১২ বছরের মেয়ের পাকস্থলী থেকে আড়াই কেজি চুলের টিউমার বের করেন চিকিৎসকরা।
এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ২১ বছরের যুবক কেরি ট্রেবলিকক হট সস দিয়ে ৪ হাজারের বেশি বাসন মাজনি খেয়ে ফেলেছিলেন। যা বিশ্বব্যাপী শোরগোল ফেলে দিয়েছিল।
৩০ বছর ধরে ইট-বালু-পাথর খান তিনি!Visit our YouTube Chanel:
যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির একজনের পেট থেকে উদ্ধার করা হয় ১৪০০ রকমের অখাদ্য। ঠিক এমনই এক ঘটনা ঘটে ভারতের মালদহে। সেখানকার এক যুবকের পেট কেটে দু’টি চামচ, একটি লোহার রডের টুকরো বের করেন চিকিৎসকরা। এমন অনেক ঘটনা রয়েছে পিকা রোগীর।
চিকিৎসকরা বলছেন, এদের কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অখাদ্য এসব জিনিস পাকস্থলীতে জমা হয়ে থাকে দীর্ঘদিন। যেগুলো শরীর হজম করতে পারে না। ফলে পেটের বিভিন্ন রোগে ভুগতে হয়। এ ছাড়াও ওজন বেড়ে যাওয়া ও ক্ষুধামন্দা হয়ে থাকে। পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ার ফলে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এসব বিষয়কে গ্রাহ্য করেন না হানস রাজ। তিনি বলেন, ‘আমি এভাবেই সুস্থ আছি। আমৃত্যু এগুলো খেয়ে যেতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি অনেকের বাড়ি থেকে খাওয়ার জন্য ইটের ছোট ছোট টুকরো সংগ্রহ করি।’ রাজ ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ছোট্ট গ্রামে বাস করেন। সেখানকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে তিনি পছন্দমতো বালু, নুড়ি পাথর, ইট ইত্যাদি সংগ্রহ করে খেয়ে থাকেন।
রাজের ঘনিষ্ট বন্ধু রাজা সিং তার বন্ধুর অদ্ভুত অভ্যাসের বিষয়ে বলেন, ‘আমি নানাভাবে বুঝিয়েছি তাকে। তবে তিনি এ অভ্যাস থেকে সরে আসতে পারেননি। তীব্র নেশায় পরিণত হয়েছে বাজে অভ্যাসটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে গত ১৬ বছর ধরে পাথর ভাঙার কাজ করছি। জানি না ঠিক কবে থেকে পাথর কাটার পাশাপাশি তা খেতে শুরু করে রাজ। আমি যখনই তার মুখে এসব দেখি; তখনই খেতে নিষেধ করি। তবুও সে তার কাজে অনড়।
৬ মিলিয়ন ফলোয়ার মাত্রা ৬ বছর বয়সেই! গ্লোবাল নিউজ।d