রহস্যময় যে গ্রামের কেউই পরে না জুতা
রহস্যময় যে গ্রামের কেউই পরে না জুতা। বিশ্বে এমন অনেক ছোট-বড় রহস্যময় স্থান আছে যেগুলো সম্পর্কে আমাকে অনেকেরই ধারণা নেই। তেমনই এক রহস্যময় গ্রাম হলো ভারতের তামিলনাড়ুর ভেলাগাভি নামক গ্রাম।
খুব ছোট সাজানো গোছানো ছবির মতো এক গ্রাম। আর এই গ্রামের লোকসংখ্যাও অনেক কম, মোটামুটি ১৫০ এর মতো। স্থানীয়দের মতে, ভেলাগাভি গ্রামের বয়স আনুমানিক ৩০০ বছর।
রহস্যময় যে গ্রামের কেউই পরে না জুতা।For More News Update:
জানেন কি, এই গ্রামের অদ্ভুত এক রীতি হলো, সেখানে কেউ জুতা বা স্যান্ডেল কোনোটিই পরেন না। অবাক করা বিষয় হলেও সত্যিই যে, এই গ্রামের ঐতিহ্য এটি। আর এর পেছনের কারণটাও রহস্যময় বটে।
ভেলাগাভি গ্রাম তামিলনাড়ুর একটি জঙ্গলে অবস্থিত। এই গ্রামে কোনো রাস্তা নেই, তাই সেখানে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় হলো ট্রেকিং। অর্ধাৎ ৭-৮ ঘণ্টা হাঁটার পরই আপনি ওই গ্রামে পৌঁছাতে পারবেন।
আর গ্রামে পৌঁছেই আপনি দেখেবেন একটি বড় সাইনবোর্ড। সেখোনে লেখা- গ্রামে ঢোকার আগে জুতা খুলে ফেলুন। জানা যায়, ভেলাগাভি গ্রামের মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই এই জুতা না পরার নীতি অনুসরণ করে আসছেন।
এর কারণ হলো, গ্রামটিতে বাড়ির চেয়ে মন্দিরের সংখ্যা অনেক বেশি। আর সেখানকার বাসিন্দারা গ্রামটিকে মন্দির বলেই মনে করেন। দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতেই জুতাহীন বসবাস করছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
তারা নিজেরাও যেমন জুতা পরেন না ঠিক তেমনই বাইরে থেকে যদি কেউ তাদের গ্রাম প্রবেশ করেন তাহলে তাকেও জুতা খুলে গ্রামে ঢুকতে হয়।
এই গ্রামে ঢোকার সাথে সাথেই আপনি দেখতে পাবেন, প্রায় বেশিরভাগ বাড়ির মাঝখানে ও গ্রামের শেষ প্রান্তে ২৫টিরও বেশি মন্দির আছে। তবে দুঃখের বিষয়, সেখানে নেই কোনো রাস্তা, হাসপাতাল কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
রহস্যময় যে গ্রামের কেউই পরে না জুতা।Visit our YouTube Chanel:
শুধু একটি ছোট চা ও মুদির দোকান আছে। গ্রামবাসীদের তাদের মৌলিক প্রয়োজনে প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী শহর কোডাইকানালে যেতে হয়।
লোকেরা যেভাবে সোজা সারি বরাবর তাদের বাড়িগুলি পাশাপাশি তৈরি করেছে তা বেশ দৃষ্টিকটু, প্রতিটি প্রবেশপথে একটি সুন্দর খোদাই করা কোলাম রয়েছে।
ভেলাগাভি গ্রামের সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, পুরো গ্রাম রাত ৭টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর উচ্চস্বরে কথা বলা কিংবা গান শোনার অনুমতি নেই। এত কঠোর নিয়ম-কানুন ও অসুবিধা সত্ত্বেও সেখানকার মানুষ সুখে আছেন।
ছোট এই গ্রামে যেখানে সুযোগ-সুবিধাও খুব কম, কিন্তু আপনি সেখানে গেলে বেশ খাতিরদারি পাবেন। সেখানকার মানুষ আপনাকে ক্ষুধার্ত থাকতে দেবেন না। সেখানকার সবাই খুবই আন্তরিক ও আপ্যায়নে সেরা।
সেখানকার মানুষের জীবনযাপন বেশ গোছানো। তাদের মূল পেশা হলো কৃষিকাজ ও ছাগল পালন। শত সমস্যা স্বত্ত্বেও ভেলাগাভির বাসিন্দারা সরকারের উদাসীনতা তাদের আচরণে প্রভাব ফেলতে দেন না। তারা কেবল হাসি দিয়েই আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে না বরং আপনার ভালোমন্দও জিজ্ঞাসা করবে।
এছাড়া গ্রামটিতে একটি ক্যাফেও আছে। যেখান থেকে সব ধরনের সাহায্য পাবেন। আপনি যদি ভেলাগাভি গ্রামে থাকার পরিকল্পনা করেন তবে তাঁবুই একমাত্র বিকল্প। এই গ্রাম ট্রেকারদের জন্য স্বর্গ।
এই গন্তব্য প্রতিটি ট্রেকারের স্বপ্ন। যারা নির্জনতা খুঁজছেন তাদের জন্য এই জায়গাটি উপযুক্ত। প্রতিবছরই শত শত পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন।
তামিলনাড়ুর কোডাইকানাল ও ভাট্টকানালের খুব কাছাকাছি হওয়া স্বত্ত্বেও ভেলাগাভি পৌঁছাতে ৭-৮ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এর কারণ হলো সেখানে নেই কোনো রাস্তা। কুম্বাক্কারাই থেকে ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একটি কঠিন ট্র্যাক পার করার মাধ্যমেই পৌঁছানো যায় গ্রামটিতে।
যদিও জঙ্গলের মধ্যকার এই ট্রেকগুলো পার করা বেশ কঠিন। এজন্য ট্রেকিংয়ে ভালো অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কারণ এই পথের পদে পদে বিপদ আসতে পারে। সঙ্গে একজন গাইড রাখাও জরুরি। না হলে গহীন জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
চিনে পুরুষদের প্রতি অনুগত হওয়ার শিক্ষা দেয় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ! গ্লোবাল নিউজ।d